উচ্চতা বাড়ানোর কার্যকরী পদ্ধতি
মানুষ সামাজিক জীব হিসেবে সমাজে বসবাস করার জন্য দৈহিক উচ্চতা একটি অতিব প্রয়োজনীয় বিষয়। ক্ষেত্র বিশেষে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই এর প্রয়োজন বোধ করা যায়।
কেউ লম্বা হতে চায় বিয়ের পাত্র বা পাত্রী হওয়ার জন্য , কেউবা আবার আর্ম ফোর্সের চাকরি নেওয়ার জন্য দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে একটু লম্বা হওয়ার আশায়। কিন্তু লম্বা হওয়ার কার্যকরী নিয়ম হয়তো অনেকেরই জানা নেই। কেউ ব্যায়াম করে, কেউ সাপ্লিমেন্ট নেয়, আর কেউ কেউ তো সার্জারী পর্যন্ত করে ফেলে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক উচ্চতা বৃদ্ধির কার্যকরী উপায় গুলো সম্পর্কে।
গোল সেটাপ
যেকোনো পরিবর্তনের পূর্বে গোল সেটআপ করা প্রয়োজন সেটা হতে পারে শারীরিক পরিবর্তন অথবা মানষিক। উচ্চতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমাদের প্রথমত আমাদের এই বিষয় পরিষ্কার কিছু ধারণা থাকা প্রয়োজন। আমরা সাধারণত জানি ১৮ বছরের পর থেকে আমাদের উচ্চতা আর বাড়ে না।কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন যে প্রকৃত পক্ষে আমাদের উচ্চতা বৃদ্ধি পায় ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত। সুতরাং যারা ২৫ বছরের মধ্যে আছেন তারা উচ্চতা বাড়ানোর যাত্রার শুরুতে হতাশ না হয়ে একটি গোল সেটাপ করে নিতে হবে যে এই যাত্রায় আপনি কি কি করবেন।
খাবার তালিকা
যেকোনো শারীরিক পরিবর্তন এর শুরুতেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় টি আসে তা হলো খাবার তালিকা বা ডায়েট। যদি আপনার ডায়েট প্ল্যান ঠিক না থাকে তাহলে আপনি শারীরিক কোন পরিবর্তনই সঠিক ভাবে করতে পারবেন না। চলুন জেনে নেই উচ্চতা বাড়ানোর জন্য আপনার খাবার তালিকায় কি কি রাখবেন।
- ডিম: ডিম একটি ভালো প্রোটিনের উৎস। এছাড়াও এতে রয়েছে মানব দেহের জন্য প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান। যা আপনার উচ্চতা বৃদ্ধিতে দারুন ভাবে সহায়ক।
- দুধ: দুধকে বলা হয় পরিপূরক খাদ্য। এতে রয়েছে উচ্চতা বৃদ্ধির সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপাদান ক্যালসিয়াম। যা আমাদের হাড় গঠনে কার্যকরী। এছাড়াও দুধে সুষম খাদ্যের প্রায় সব উপাদানই বিদ্যমান।
- বাদাম: কাঠবাদা, কাজুবাদা, পেস্তাবাদাম, চিনা বাদা অথবা আখরোট। এই সব গুলো বাদামে রয়েছে উচ্চতা বাড়াতে সহায়ক সকল প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। যেমন- জিংক, পটাসিয়াম, ফসফরাস সহ আরো বিভিন্ন খনিজ উপাদান।
- অ্যাভোকাডো : স্বাস্থ্যকর হাট, ক্যান্সার প্রতিরোধ, বিষন্নতা হ্রাস, কোষ্ঠকাঠিন্য উপশম, অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখা এবং অস্টিওপোসিস প্রতিরোধসহ নানাবিদ উপকারী গুনাগুন সমৃদ্ধ অ্যাভোকাডো উচ্চতা বৃদ্ধিতেও দারুন ভাবে সহায়।
- শীম: ভিটামিন এবং কঠিন সমৃদ্ধ এই সবজি উচ্চতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। শীমে থাকা খনিজ উপাদান মাংসপেশী এবং টিস্যু গঠনের কাজ করে।
- ডাল: ডাল হল একটি উদ্ভিজ্জ আমিষের উৎস। আমিষের পাশাপাশি ডালে রয়েছে ভিটামিন এবং খনিজ যা উচ্চতা বাড়াতে সহায়ক।
- ব্রোকলি: আয়রন ফাইবার এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই সবজিটি উচ্চতা বাড়ানোর পাশাপাশি আমাদের দেহের নানাবিদ পুষ্টি সাধন করে থাকে। এছাড়াও এটি গ্রোথ হরমোন অর্থাৎ HGH হরমোনের উদ্দীপনা বাড়াতেও সহায়ক।
- গাজর: গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন সর্বনিম্ন ৩টি করে গাজর খেলে তা উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করে। কারণ এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি সহ আরো অনেক মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট।
- কুমড়ো বীজ: হাড় ও দাত গঠনে সহায়ক ম্যাগনেসিয়ামে ভরপুর হলো এই কুমড়ো বীজ। যা উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে রয়েছে উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক অ্যামাইনো এসিড যা হাড় বৃদ্ধির উদ্দীপনা জাগায়।
- উচ্চতা বাড়ানোর মিল্কশেক: এই মিশ্রন টি তৈরী করার জন্য লাগবে - তালমিশ্রি,কালো তিল, কাঠ বাদাম, কাজুবাদাম, অশ্বগন্ধা এবং দূধ। উপাদান গুলো সংগ্রহ করে একটা গ্রাইন্ডারের জারে দূধ ছাড়া সব গুলো উপকরণ আগে গুড়ো করে নিন। তারপর প্রয়োজন মতো দুধ দিয়ে মিল্কশেক তৈরী করে ফেলুন। এটি প্রতিদিন শরীচর্চার পরে গ্রহন করুন। এটি আপনার শরীরের বিভিন্ন পুষ্টি চাহিদা পুরন করার পাশাপাশি উচ্চতা বাড়াতেও সাহায্য করবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url